তথ্য ও সংস্কৃতি
•   ভূমিকা

•   চারটি পরিদপ্তর নিয়ে গঠিত হয়েছে তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ। এগুলি হল – তথ্য, সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র এবং পুরাতত্ত্ব ও জাদুঘর। এই পরিদপ্তরগুলির উদ্দেশ্য হল – বিভিন্ন গণমাধ্যমের দ্বারা রাজ্য সরকারের ক্রিয়াকলাপ এবং সাফল্যের প্রচার করা, বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী এবং বরিষ্ঠ আধিকারিকদের সচেতন রাখা, লোকসংস্কৃতি সহ বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উন্নয়ন এবং সংরক্ষণ, পশ্চিমবঙ্গের পুরাতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণ, শিল্প, চলচ্চিত্র, নাটক ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সম্মান জ্ঞাপন করা, চলচ্চিত্র, থিয়েটার, নাটক ইত্যাদির উৎকর্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্তরীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ভারতীয় এবং বিদেশী পর্যটকদের আতিথেয়তা প্রদান করা। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ আয়োজিত কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, শিশু চলচ্চিত্র উৎসব, চলচ্চিত্র শিক্ষা বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করে। ফিল্মসিটি নির্মাণ সহ রাজ্যের চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের জন্য বিবিধ কার্যকলাপে নিয়োজিত থাকে রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ।

•   তথ্য পরিদপ্তর

•   তথ্য পরিদপ্তর বিভিন্ন প্রদর্শনী, আতিথিয়তা এবং প্রোটোকল, রাজ্যের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন, নিউজব্যুরো, গ্রামীণ তথ্য, প্রকাশন এবং বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত কাজে ব্যাপৃত থাকে।

•   সচেতনতা কর্মসূচি

•   সারাবছর ধরে বাল্যবিবাহ এবং মহিলাদের ক্ষমতায়ণ, স্বাস্থ্য সচেতনতা সংক্রান্ত বিষয়সমূহ এবং পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধি কর্মসূচি পালন। এই সরকারের দু বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রত্যেক জেলা এবং মহকুমা অফিসে দু দিন ব্যাপী প্রচার কর্মসূচি পালন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে ‘উন্নয়নের পথে, মানুষের সাথে’ নামক প্রদর্শনীর মাধ্যমে সরকারের সাফল্যের প্রতি আলোকপাত করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানগুলিতে লোক সংস্কৃতির বিবিধ নিদর্শন তুলে ধরা হয়।

•   ম্যানুস্ক্রিপটের ডিজিটাইজেশন

•   বাংলার বিশিষ্ট লেখকদের চিঠি এবং পান্ডুলিপির ডিজিটাইজেশন সম্পূর্ণ হয়েছে।

•   প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে যোগদান

•   ২০১২-য় নিউদিল্লিতে ১২ বছর পর পশ্চিমবঙ্গ প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে যোগদান করে। প্যারেডে পুরুলিয়ার ছৌ – নাচ কে থিম করে তৈরি হওয়া পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো প্রথম স্থান অধিকার করে। এদিন পুরুলিয়ার শিবশক্তি ছৌ নাচ অ্যাকাডেমির জোদাহরম কুমার এবং সম্প্রদায় তাঁদের নৃত্য প্রদর্শন করেন। নিউদিল্লির রাষ্ট্রীয় রঙ্গশালা ক্যাম্পে ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা দপ্তর আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে পুরুলিয়ার ছৌ নাচের দলটি প্রথম স্থান অধিকার করে।

•   লোকশিল্পের পুনরুজ্জীবন

•   বাংলার লোকশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে রাজ্যজুড়ে সহস্রাধিক লোকশিল্পীর নাম নথিভুক্ত করে পরিচয়পত্র প্রদান করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শিল্পীদের অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বহাল ভাতা প্রদান করা হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন প্রচার কর্মসূচিতে লোকশিল্পীদের কাজে লাগানোর এবং জীবন নির্বাহের লক্ষ্যে তাঁদের নাম নথিভুক্তকরণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

•   বিভিন্ন ভাষাকে সরকারি ভাষার মর্যাদা প্রদান

•   প্রচলিত আইনের সংশোধনী প্রস্তাব এনে নেপালি, উর্দু, হিন্দি, অলচিকি, ওড়িয়া, সাঁওতালি এবং গুরুমুখী(পাঞ্জাবী) ভাষাকে সরকারি ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।

•   সম্মান প্রদান

•   ২০১৩-১৪ আর্থিক বর্ষে ১৭৪টি অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত ব্যাক্তিত্বদের প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করা হয়েছে।

•   নতুন বিস্তীর্ণ সংস্কৃতি কেন্দ্র

•   রবীন্দ্রসদন, নন্দন, বাংলা অ্যাকাডেমি ইত্যাদিকে নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কৃতি কেন্দ্র (Cultural Hub) নির্মাণের মাস্টার প্ল্যান প্রস্তুত করা হয়েছে।

•   সংস্কৃতি পরিদপ্তর

•   জন্মবার্ষিকী উদযাপন

•   বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের জন্মদিবসে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যজুড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম এবং দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের জন্মদিবস উদযাপিত হয়েছে আড়ম্বরের সাথে।

•   বাংলা সঙ্গীত মেলা

•   ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি আয়োজন করা হয়েছিল বাংলা সঙ্গীত মেলার। এই অনুষ্ঠানে কমপক্ষে ১২০০জন সঙ্গীতশিল্পী যোগদান করেন।

•   পুরস্কার ও সম্মান

•   শিল্প, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, সঙ্গীত এবং চলচ্চিত্রে সারাজীবনের অবদানের জন্য বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের পুরস্কার প্রদান করেছে রাজ্য সরকার। তৃতীয় বঙ্গবিভূষণ এবং বঙ্গভূষণ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ২৪ জনকে বঙ্গবিভূষণ এবং ৬ জনকে বঙ্গভূষণ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় বারের সঙ্গীত মহা সম্মান পেয়েছেন ৩ জন শিল্পী। সঙ্গীত সম্মান পেয়েছেন ৪ জন শিল্পী ও ৬টি গোষ্ঠী যারা সঙ্গীত জগতে অসামান্য অবদান রেখেছেন। ৪৬ জন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব এবং ৪টি প্রোডাকশন হাউস কে চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের জন্য দ্বিতীয়বারের ‘মহানায়ক সম্মান’ প্রদান করা হয়েছে। টেলি মিডিয়ায় বিশেষ অবদানের জন্য ৯০ জনকে ‘টেলি অ্যাকাডেমি পুরস্কার’ প্রদান করা হয়েছে। সাহিত্য, সংস্কৃতি, লোকশিল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এই দপ্তরের আওতাভুক্ত বিভিন্ন অ্যাকাডেমি, কেন্দ্র এবং পরিষদ কর্তৃক ২১টি পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। এগুলি হল – রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার (৩টি ক্ষেত্রে), নজরুল স্মৃতি পুরস্কার, বঙ্কিম স্মৃতি পুরস্কার, বিদ্যাসাগর স্মৃতি পুরস্কার (২টি ক্ষেত্রে), গিরিশ পুরস্কার, দীনবন্ধু পুরস্কার, অবনীন্দ্র পুরস্কার, রামকিঙ্কর বেজ পুরস্কার, বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় পুরস্কার, আলাউদ্দিন পুরস্কার, উদয়শঙ্কর পুরস্কার, গিরিজা শঙ্কর পুরস্কার, জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ পুরস্কার, ঠাকুর পঞ্চানন বর্মা পুরস্কার, পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু পুরস্কার, সুধী প্রধান পুরস্কার, লালন পুরস্কার এবং বীণা দাশগুপ্ত পুরস্কার। রাজ্য চারুকলা পর্ষদের পক্ষ থেকে ফাইন আর্টসে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ১০ জনকে শিল্পী মহাসম্মান, শিল্পী সম্মান, লাইফ টাইম অ্যাচিভমেন্ট, শিল্প ঐতিহাসিক – কলা সমালোচক পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি যাত্রা আকাডেমি কর্তৃক বিশিষ্ট যাত্রাশিল্পীদের ‘ শান্তিগোপাল এবং তপন কুমার পুরস্কার’ প্রদান করা হয়েছে।

•   স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধশত জন্মবর্ষ উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠান

•   ছাত্র এবং যুবদের বিবিধ কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে রাজ্যজুড়ে স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধশত জন্মবর্ষ উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়েছে। ২০১৪ –র ১০ জানুয়ারি কলকাতার রেড রোডে এই প্রথমবার বিবেক চেতনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

•   পশ্চিমবঙ্গ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাকাডেমি

•   কাজী নজরুল ইসলামের অমূল্য সাহিত্যিক নিদর্শনগুলির সংরক্ষণ এবং এ বিষয়ে গবেষণার জন্য নজরুল অ্যাকাডেমি তৈরি করা হয়েছে। কোচবিহার এবং পুরুলিয়ায় পশ্চিমবঙ্গ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাকাডেমি ‘নজরুল গীতির’র কর্মশালার আয়োজন করেছিল। নজরুল ইসলাম অ্যাকাডেমির আওতায় নজরুল ইসলামের বহুবিধ সাহিত্যের ওপর গবেষণা ইত্যাদির সুবিধার জন্য ‘নজরুল তীর্থ’ নামে একটি শিল্পকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। ‘নজরুল তীর্থে’ ৪০০ আসন এবং সমস্ত আধুনিক সুবিধাযুক্ত একটি প্রেক্ষাগৃহ রয়েছে। বাংলায় শিল্প এবং সংস্কৃতির প্রসারে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের স্মৃতিতে কলকাতার আলিপুরে ‘ধন – ধান্যে স্টেডিয়াম’ নির্মাণের কাজ পূর্ণ গতিতে চলছে।

•   নাট্য মেলা

•   মালদায় ৫টি নাট্যগোষ্ঠীকে নিয়ে ৪-৮ ডিসেম্বর, ২০১৩, কল্যাণীতে ৮টি নাট্যগোষ্ঠীকে নিয়ে ৮-১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩, কলকাতা এবং হাওড়ায় ৯০টি নাট্যগোষ্ঠীকে নিয়ে ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৩ থেকে ১ জানুয়ারি, ২০১৪ এবং আসানসোলে ৭টি নাট্যগোষ্ঠীকে নিয়ে ১৯-২৬ জানুয়ারি নাট্যমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

•   উদয়শঙ্করের জন্মবার্ষিকী উদযাপন

•   ৭ দিন ধরে নৃত্য উৎসবের মাধ্যমে উদয়শঙ্করের জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। এই উৎসবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৪৮টি নৃত্যগোষ্ঠী যোগদান করে।

•   পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ

•   রাজ্যের সাংস্কৃতিক পরিকাঠামোর উন্নয়নের উদ্দেশ্যে রবীন্দ্রসদন, মিনার্ভা থিয়েটার, মহাজাতি সদন এবং রবীন্দ্র মঞ্চের মেরামত এবং সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। টেগোর কালচারাল কমপ্লেক্স স্কিমের আওতায় রাজ্যজুড়ে ৩২টি রবীন্দ্র ভবন / সদনের সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়েছে। পুরুলিয়া রবীন্দ্র ভবন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুতই এটির উদ্বোধন হবে।

•   প্রকাশন এবং ডিজিটাইজেশন

•   তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ ১৭ খন্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে ৮টি খন্ড ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অ্যাকাডেমি প্রকাশ করেছে। এ বছরের মধ্যে দু খন্ডে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় সমগ্র প্রকাশিত হবে। সঙ্গীত, চলচ্চিত্র, চিত্রকলা ইত্যাদির ডিজিটাইজেশনের কাজ চলছে।

•   অ্যাকাডেমি

•   কোচবিহারে স্থাপিত রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি কাজ শুরু করেছে। ঝাড়গ্রামে বীরসা মুন্ডা অ্যাকাডেমি এবং বীরভূমের সিউড়িতে বীরসা মুন্ডা অ্যাকাডেমি তৈরির কাজ চলছে।

•   কলকাতা লিটল ম্যাগাজিন মেলা এবং সাহিত্যোৎসব

•   ছোট সংবাদপত্র এবং পত্রিকাগুলোকে উৎসাহ দান করতে ১১-১৫ জানুয়ারি, ২০১৪-য় কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়েছে কলকাতা লিটল ম্যাগাজিন মেলা এবং সাহিত্যোৎসব। এই উৎসবে ৪০০টি লিটল ম্যাগাজিন যোগদান করে।

•   সাহিত্য ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে অবসরভাতা প্রকল্প

•   বরিষ্ঠ এবং দরিদ্র শিল্পীদের আর্থিক সাহায্যার্থে রাজ্যসরকার ১৩৬ জনকে সাহিত্য এবং সংস্কৃতির অবসরভাতা এবং ২৮ জনকে বিশেষ ভাতা প্রদান করেছে।

•   ষষ্ঠ শিশু কিশোর উৎসব (রাজ্যস্তর)

•   বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে ২০১৪-র ৫-১২ জানুয়ারি, ষষ্ট রাজ্য শিশু কিশোর উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। এই উৎসবে কমপক্ষে ৬০০ ছাত্রছাত্রী যোগদান করে।

•   ‘পৌষ উৎসব’ এবং বর্ষবরণ উৎসব

•   কলকাতার স্ট্যান্ড রোডের জেমস প্রিন্সেপ মেমোরিয়ালে এই প্রথমবার পৌষ উৎসব এবং বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়। ২০১৩-র ২২-২৪ ডিসেম্বর পৌষ উৎসব এবং ৩০ ডিসেম্বর – ১ জানুয়ারি, ২০১৪ বর্ষবরণ উৎসব পালিত হয়।

•   ধ্রুপদ উৎসব এবং আয়িবাহার

•   কলকাতার স্ট্যান্ড রোডের জেমস প্রিন্সেপ মেমোরিয়ালে ধ্রুপদ উৎসব এবং আয়িবাহারের আয়োজন করা হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি – ১ মার্চ, ২০১৪-য় ধ্রুপদ উৎসব এবং ২ - ৩ মার্চ, ২০১৪-য় আয়িবাহার অনুষ্ঠিত হয়।

•   মাটি উৎসব

•   বর্ধমানের পানাগড়ে ২০১৪-র ১৪-২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দ্বিতীয় মাটি উৎসব উদযাপিত হয়।

•   যাত্রা উৎসব

•   উত্তর ২৪ পরগণার বারাসতে ৬-৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ এবং কলকাতার বাগবাজারের ফণীভূষণ বিদ্যাবিনোদ যাত্রা মঞ্চে ৯ ই ফেব্রুয়ারি-১ মার্চ, ২০১৪ পর্যন্ত মোট পঁচিশ দিন ব্যাপী যাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

•   নাট্যগোষ্ঠীগুলোকে আর্থিক সহযোগিতা

•   ২০০ টি নাট্যগোষ্ঠীকে ৫০,০০০ টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। স্বামী বিবেকানন্দের ১৫০ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের জন্য ৯৮ টি সংস্থাকে মোট ২ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে।

•   সারদা মা ও স্বামী বিবেকানন্দের পৈর্তৃক বাড়ি এবং ভগিনী নিবেদিতার স্মৃতি বিজড়িত ভবনের সংস্কার

•   বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃক দার্জিলিং-এ ভগিনী নিবেদিতার স্মৃতি বিজড়িত রায়ভিলা ভবনের সংস্কার সাধনের জন্য এই দপ্তরের পক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়াও বরানগর রামকৃষ্ণ মিশনের সংস্কারের জন্য ১ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। ভগিনী নিবেদিতার স্মৃতিধন্য রায়ভিলাকে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করেছে। এ ছাড়াও স্বামী বিবেকানন্দের পৈতৃক বাড়ী এবং বাগবাজারের ‘মায়ের বাড়ি’ এবং ভগিনী নিবেদিতার স্মৃতিবিজড়িত ভবনের সংস্কার এবং সংরক্ষণের প্রকল্প সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে।

•   চারুকলা উৎসব ও প্রদর্শনী

•   ২০১৪-র ১৪-২৩ শে ফেব্রুয়ারি রবীন্দ্রসদন- নন্দন চত্বর এবং অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে চারুকলা উৎসব ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল।

•   চলচ্চিত্র পরিদপ্তর/ অধিকার

•   রাজ্যের চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন শিল্পের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে চলচ্চিত্র পরিদপ্তর। সেগুলি হলঃ সিনেমা এবং টেলিভিশন সিরিয়ালের শ্যুটিং-এর জন্য নতুন ফ্লোর নির্মাণ এবং পুরনো স্টুডিও ফ্লোরগুলির উন্নয়ন, দুটি ফিল্মসিটির নির্মাণ ও উন্নয়ন এবং কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ও কলকাতা আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন। এই উৎসবে ভারত এবং বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা যোগদান করেন। এই চলচ্চিত্র উৎসবে রেট্রোস্পেক্টিভ, চলচ্চিত্র ডকুমেন্টারি এবং ফিচার ফিল্মের সংরক্ষণ সম্পর্কে তুলনামূলক আলোচনা করা হয়।

•   টেকনিসিয়ান স্টুডিও

•   চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন শিল্পকে সহায়তা করতে রাজ্যসরকার টেকনিসিয়ান স্টুডিও-এর সাধারণ তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব গ্রহণ, পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রগুলির দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। প্রায় ৩৩.৫০ কোটি টাকা ব্যয় করে চারটি নতুন ফ্লোর নির্মাণ এবং দুটি ফ্লোরকে অত্যাধুনিক সুবিধাযুক্ত রূপে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করা হয়েছে। ছটি ফ্লোরের মধ্যে তিনটিতে ইতিমধ্যেই কাজ হচ্ছে, দুটি কাজের জন্য প্রায় প্রস্তুত এবং আরেকটিতে অ্যাকোয়াস্টিকস-এর কাজ চলছে। এই ফ্লোরগুলি বাংলা সিনেমার প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, তপন সিনহা, উত্তমকুমার, সুচিত্রা সেন, এবং ঋতুপর্ণ ঘোষের নামে নামাঙ্কিত। সিনেমা শতবর্ষ ভবনের সন্নিহিত প্রেক্ষাগৃহটির কাজও সম্পন্ন হয়েছে। কেবলমাত্র প্রেক্ষাগৃহটির অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।

•   ফিল্মসিটি স্থাপন

•   জলপাইগুড়ির ডাবগ্রাম এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বারুইপুরে দুটি পিপিপি মডেলের ফিল্মসিটি নির্মাণের উদ্দেশ্যে জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। বারুইপুরের প্রকল্পের জন্য তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ জমি অধিগ্রহণ করেছে। ডাবগ্রাম প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। একজন লেনদেন সংক্রান্ত পরামর্শদাতাকে নিয়োগ করা হয়েছে। প্রায়োগিক সমীক্ষা এবং প্রাথমিক ডিপিআরএস সম্পন্ন হয়েছে এবং সম্মতিপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।

•   নন্দন

•   নন্দন পশ্চিমবঙ্গের প্রধান চলচ্চিত্র কেন্দ্র এবং চলচ্চিত্রপ্রেমীদের গর্ব। নন্দনে সর্বোচ্চ মানের বিদেশী এবং ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শন, প্রখ্যাত নির্দেশকদের রেট্রোস্পেকটিভ এবং চলচ্চিত্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এবং সোসাল কমিউনিকেশন সিনেমা কনফারেন্স ছাড়াও ফিল্ম সোসাইটি এবং ফরেন মিশনগুলির সহযোগিতায় ২০১৩-১৪-য় বিভিন্ন চলচ্চিত্র অনুষ্ঠিত হয়েছে। নন্দন এখন কলকাতার সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র রূপে প্রতিষ্ঠিত। নন্দন-এ নতুন শব্দ ও আলোক ব্যবস্থা এবং একটি আধুনিক 2K প্রজেকশন সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে।

•   সিনেমা শতবর্ষ ভবন

•   ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্স এই পরিদপ্তরের নিয়মিত কার্যকলাপের মধ্যে পড়ে। এটি সিনেমা শতবর্ষ ভবনে আয়োজন করা হয়। ২০১৩-১৪ য় সি.সি.বি ছ’ সপ্তাহ ব্যাপী ফিল্ম অ্যাপ্রিসিয়েশন কোর্সের আয়োজন করে। এই কর্মকাণ্ডে ৪৯ জন অংশগ্রহণ করেন এবং ২.৭০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হয়। ২০১৪-১৫-তেও এই কোর্সটি প্রতিবছরের মত অনুষ্ঠিত হবে। উত্তরবঙ্গে প্রায় একই রকম একটি কোর্স করানোর কথা প্রস্তাবিত হয়েছে।

•   কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব

•   ২০১৩ এর ১০-১৭ নভেম্বর ১৯ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। অতুলনীয় সাড়া পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই উৎসবের উদ্বোধনী এবং সমাপ্তি অনুষ্ঠান অকুস্থলে উপস্থিত দর্শক এবং টেলিভিশনের দর্শকদের দ্বারা উচ্চ প্রশংশিত হয়েছে। উৎসবে ৬০টি দেশের ১৮৭টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। এর জন্য সরকারি বাজেটে বরাদ্দ ছিল ২.০৮ কোটি টাকা। এই প্রথমবার কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হবে প্রতিযোগিতামূলক। ২০১৪-য় সূচনা করা হবে ‘শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র’ এবং ‘শ্রেষ্ঠ নির্দেশক’ প্রতিযোগিতার। সমাগত বছরগুলিতে বাকি বিভাগগুলির সূচনা করা হবে।

•   কলকাতা আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব

•   ২০১৩-এর ২০-২৮ ডিসেম্বরে নন্দন, রবীন্দ্রসদন ও শিশিরমঞ্চে তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ কলকাতা আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করেছিল। এই উৎসবে ১৮৬টি শিশু চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়।

•   ফিল্ম আর্কাইভ

•   ফিল্ম আর্কাইভ চলচ্চিত্র পরিদপ্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সত্যজিৎ রায় নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর পাশাপাশি মূল পান্ডুলিপি, চিত্রনাট্য, পোষ্টার এবং এই প্রবাদপ্রতিম চলচ্চিত্র নির্দেশকের বিভিন্ন সিনেমার স্থিরচিত্র এই আর্কাইভে সংরক্ষিত আছে। ঋতুপর্ণ ঘোষ এবং মহানায়ক উত্তমকুমারের চলচ্চিত্র সমূহও সংরক্ষণ করবে এই আর্কাইভ। বর্তমানে আর্কাইভে ২৪৫টি ডকুমেন্টারি এবং স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ও ১৪০টি ফিচার ফিল্ম সংরক্ষিত হয়েছে। ২০১৪-১৫-য় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্রগুলির ডিজিটাইজিং প্রিন্ট এবং সংরক্ষণের প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

•   রূপকলা কেন্দ্র

•   পিছিয়ে পড়া ও প্রান্তিক মানুষের সামাজিক চাহিদা এবং সাফল্যের কাহিনী তুলে ধরেছে এমন চলচ্চিত্রগুলির সংরক্ষণের কাজে এখন ব্যাপৃত রূপকলা কেন্দ্র। ইন্দো-ইতালিয় উদ্যোগে এই কাজ চলছে)। ভিডিওগ্রাফিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে প্রসিদ্ধ রূপকলা কেন্দ্রে নির্দেশনায় ২ বছর ব্যাপী ৬টি স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা কোর্স করানো হয়। এগুলি হল – মোশন পিকচার্স ফোটোগ্রাফি, সম্পাদনা, সাউন্ড ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন এবং অ্যানিমেশন ক্রিয়েশন ও নির্দেশনা। (প্রতিটি ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি এবং সহায়ক গ্রন্থের সাহায্য পাওয়া যায়। ২০১৪-১৫-য় পরিবর্তিত প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই কেন্দ্র বেশ কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং উপকরণ আনানোর ব্যবস্থা করবে।

•   পুরনো এবং গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্রের সংরক্ষণ এবং ডিজিটাইজেশন

•   চলচ্চিত্র প্রেমিক এবং সমালোচকদের আর্কাইভ এবং শিক্ষা সংক্রান্ত সুযোগসুবিধা প্রদান ছাড়াও চলচ্চিত্র শতবর্ষ ভবনের মূল উদ্দেশ্য হল পুরনো গুরুত্বপূর্ণ সেলুলয়েড চলচ্চিত্রগুলির ডিজিটাইজেশন করা। বহু প্রথিতযশা ব্যক্তিত্বের প্রায় ১০,০০০ চলচ্চিত্র আর্কাইভে সংরক্ষিত আছে। রাধা স্টুডিওর ইতিমধ্যেই সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে এবং খুব শীঘ্রই এখানে কাজ শুরু হবে। ভবনের সন্নিহিত প্রেক্ষাগৃহটির নির্মানের কাজও শেষ হয়েছে। এটি চালু করতে শব্দ এবং দৃশ্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র সামগ্রী ক্রয় করে শীঘ্রই স্থাপন করা হবে।

•   সিনেমা এবং টেলিভিশন শিল্পী ও শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্যবিমা

•   ২০১৩-১৪ য় চলচ্চিত্র এবং টেলেভিশন শিল্পী, শ্রমিক ও তাদের পরিবারের জন্য নতুন স্বাস্থ্যবিমা যোজনা চালু করা হয়েছে। এই বিমা যোজনায় বার্ষিক ১.৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যেতে পারে। এখনও পর্যন্ত ১৩,৬৮২ জন উপভোক্তা এই বিমা যোজনার আওতায় নথিভুক্ত হয়েছেন।

•   পুরাতত্ত্ব এবং মিউজিয়ম পরিদফতর

•   ১০৮টি স্মৃতিস্তম্ভ এবং ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রিজারভেশন অফ হিস্টোরিক্যাল মনুনেন্টস অ্যান্ড অবজেক্টস অ্যান্ড এক্সক্যাভেশন অফ আর্কিওলজিক্যাল মিউজিয়ম অ্যাক্ট ১৯৫৭ অ্যান্ড রুল ১৯৬৪’ র আওতাভুক্ত স্থানসমূহের সংরক্ষণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদপ্তর হল পশ্চিমবঙ্গ সরকার পুরাতত্ত্ব ও মিউজিয়ম পরিদপ্তর। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পুরাতত্ত্ব এবং মিউজিয়মে সাতটি ডিসপ্লে গ্যালারি আছে যেখানে পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক পরিচয়কে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও ৬টি জেলা মিউজিয়ম এবং ২০টি গ্রামীণ মিউজিয়মকে আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তা দেওয়া হয়। ২০১৪-১৫ য় পুরাতাত্ত্বিক সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছে এই পরিদপ্তর।

•   অনুসন্ধান এবং খনন

•   ১) পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানা এলাকার মোগলমারিতে খনন করে ষষ্ঠ শতাব্দীর বৌদ্ধ সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া গেছে। সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে গুপ্তযুগের বিভিন্ন হস্তনির্মিত বস্তু।

•   ২) পশ্চিম মেদিনীপুরে সুবর্ণরেখা উপত্যকা এবং মুর্শিদাবাদের অহিরণে অনুসন্ধানের কাজ গ্রহণ করা হবে।

•   সংরক্ষণ

•   ২০১৪-১৫ য় মোগলমারিতে খনন করে সন্ধান পাওয়া বৌদ্ধ মঠের সংরক্ষণের প্রকল্প নেওয়া হবে। রাজ্যের বিভিন্ন স্মৃতিস্তম্ভগুলির সংরক্ষণের প্রকল্প ১৩তম ফিনান্স কমিশন প্লানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। হুগলীর আন্তপুরে রাধাগোবিন্দ মন্দিরের সংরক্ষণের কাজ এই বছরও চলবে।

•   সংগ্রহশালা

•   ক) স্টেট আর্কিওলজিক্যাল সংগ্রহশালা- স্টেট আর্কিওলজিক্যাল সংগ্রহশালার নতুন ভবনে রয়েছে ৭টি গ্যালারি। পি.ডব্লিউ.ডি. বিদ্যুৎ সংযোগ এবং অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করলে ভবনের তিনতলায় এছাড়াও চারটি নতুন গ্যালারি খোলা হবে। ভালোভাবে সংগ্রহশালাকে সংরক্ষণের জন্য গবেষণাগারের সংরক্ষণ প্রক্রিয়াকেও উন্নততর করা হবে। পুরাতাত্ত্বিক সামগ্রীর নথিভুক্তকরণের প্রকল্পও গ্রহণ করা হবে।

•   খ) জেলা সংগ্রহশালা- জেলা সংগ্রহশালাগুলিকে রাজ্য সরকার নিয়মিত কারিগরি এবং আর্থিক সহায়তা দিয়ে দেখাশোনা করে। এগুলি হল – ১) বিষ্ণুপুরে আচার্য্য যোগেশ চন্দ্র পুরাকীর্তি ভবন (বাঁকুড়া জেলা সংগ্রহশালা) ২) মালদায় মালদা জেলা সংগ্রহশালা ৩) বালুরঘাটে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সংগ্রহশালা ৪) রায়গঞ্জে উত্তর দিনাজপুর জেলা সংগ্রহশালা ৫) জিয়াগঞ্জে মুর্শিদাবাদ জেলা সংগ্রহশালা এবং ৬) বাগনান আনন্দ নিকেতন কৃতীশালা (হাওড়া জেলা সংগ্রহশালা)।

•   গ) আঞ্চলিক সংগ্রহশালা- রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের জেলা সংগ্রহশালাগুলি ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ইতিহাসকে তুলে ধরতে স্থানীয় বাসিন্দা ও এনজিওগুলির সহায়তায় গড়ে ওঠা বেশকিছু গ্রামীণ সংগ্রহশালা রয়েছে। এগুলিকেও নিয়মিত বার্ষিকভাতা দেয় রাজ্য সরকার।

•   ঘ) সাইট সংগ্রহশালা- ২০১৪-১৫ য় পুরাতাত্ত্বিক খননস্থানগুলিতে বেশ কিছু সাইট সংগ্রহশালা গড়ে তোলা হবে। এগুলি হল- ১) উত্তর ২৪ পরগণায় চন্দ্রকেতুগড় ২) পুরুলিয়ার পাকবিরা ৩) বর্ধমানের মঙ্গলকোট ৪) মালদার জগজীবনপুর এবং ৫) পশ্চিম মেদিনীপুরের মোগলমারি। মোগলমারি এবং পাকবিরার সংগ্রহশালা নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই অর্থ নিশ্চিত করা হয়েছে।

•   স্মৃতিসৌধ নির্মাণ

•   মুর্শিদাবাদের পলাশীর ঐতিহাসিক যুদ্ধপ্রান্তর এবং নদীয়ার চৌগাছিতে দীনবন্ধু মিত্রের বাড়িতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে।

•   গবেষণা এবং প্রকাশনা

•   এই পরিদফতরের পক্ষ থেকে নিয়মিত বই, অ্যালবাম, খননের রিপোর্ট এবং জার্নাল প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক পুরাতাত্ত্বিক কার্যকলাপকে সামনে রেখে বক্তৃতা, সেমিনার এবং কর্মশালার আয়োজনও করা হয়। কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শহরে এই পরিদফতরের পক্ষ থেকে প্রদর্শনী, সচেতনতামূলক প্রচার এবং extra mural activity-র আয়োজন করা হয়। জগজীবনপুরের পাথরের ভাস্কর্য এবং টেরাকোটার ফলকের ক্যাটালগ যা এখন স্টেট আর্কিওলজিক্যাল মিউজিয়মে রয়েছে তা এই বছরের মধ্যে প্রকাশিত হবে।

•   পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন

•   ২০১৪-র ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন ১৬৬টি স্থানকে হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করেছে। ২০১১-র জুন থেকে ১৩টি হেরিটেজ সাইটের পুণরুদ্ধার ও সংরক্ষণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ১৩টির মধ্যে ১০টি প্রকল্পের কাজ ২০১৪-র ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি ৩টি প্রকল্পের কাজও শীঘ্রই সম্পন্ন হবে। এটি উল্লেখযোগ্য যে, ভগিনী নিবেদিতার স্মৃতিধন্য রায়ভিলাকে পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন হেরিটেজ সাইট হিসাবে ঘোষণা করেছে। ২০১৩-র ২২ নভেম্বর কমিশন ডেনমার্কের জাতীয় মিউজিয়ম এবং হুগলি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যৌথভাবে একটি কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালার বিষয় ছিল – ‘শ্রীরামপুরে ঐতিহ্যের সংরক্ষণ এবং পর্যটনের প্রসার’। ডেনমার্ক এই সাইটের কাজের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং তারা আরও যৌথ প্রকল্প, প্রশিক্ষণ শিবির ইত্যাদি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ডাচ সরকারও হেরিটেজ কমিশনের কর্মশালায় যোগদান করেছে এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহী। হেরিটেজ কমিশন বর্তমানে অর্থনৈতিক স্বশাসন লাভের উদ্দেশ্যে ওয়েস্টবেঙ্গল হেরিটেজ অ্যাক্ট ২০০১ এ সংশোধনী আনার ব্যাপারটি খতিয়ে দেখছে।